গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত নৃশংসতার প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদ ও সংহতি র‍্যালি


 বিশ্ব বিবেককে স্তম্ভিত করে ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় চলছে ইতিহাসের বর্বরতম নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। বিরামহীন ইসরায়েলি বিমান আক্রমণ আর স্থলভাগে তাদের সেনাবাহিনীর উপর্যুপরি হামলায় রাফা ও গাজায় সকল স্থাপনা আজ ধূলিসাৎ। নির্বিচার এই আক্রমণ থেকে নারী, শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ-কেউই নিস্তার পায়নি। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে মৃত ও আহতদের সংখ্যা। মৃতদেহ কবরস্থ করার মতো সামান্য ভূখণ্ড পর্যন্ত আজ অবশিষ্ট নেই। সেখানে অবিরাম বিমান আক্রমণ আর বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে টিকে থাকা মানব বসতির শেষ চিহ্নটুকু। মসজিদে প্রার্থনারত মানুষ কিংবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরাও আজ নিরাপদ নয়। সেখানে নির্বিচার বোমা হামলায় নিমিষেই তাদের জীবনাবসান ঘটছে। বুঝতে কষ্ট হয় না যে ইসরায়েলি হামলার একমাত্র লক্ষ্য-পৃথিবীর মানচিত্র থেকে রাফা ও গাজা নামের জনপদকে


নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। গত ৭৫ বছর ধরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের নির্যাতিত ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর আজও বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে পারেনি। নিজ আবাসভূমিতে তারা আজ উদ্বাস্তু। নিরীহ নারী ও শিশুদের মৃত্যুর মিছিল মানবতাকে পারেনি সোচ্চার করতে। শুধু এবারের ইসরায়েলি আক্রমণেই মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮ হাজার অতিক্রম করেছে।


আজ গাজায় পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ শিশু আর বিধবার সংখ্যা পরিমাপযোগ্য নয়, এবং প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। মাথা গোঁজার আশ্রয় তো দূরের কথা, একবেলা খাবার, চিকিৎসা কিংবা তৃষ্ণা নিবারণের সামান্য পানিও আজ তাদের কাছে দুষ্প্রাপ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ইতিহাসের জঘন্যতম এই গণহত্যার ঘটনায় বিশ্ব বিবেক নিরব, জাতিসংঘসহ মানবাধিকার নামধারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব আজ কেবল সংবাদ সম্মেলন আর বিবৃতির মাঝেই সীমাবদ্ধ।


এবারের রমজান মাস এই অঞ্চলের জন্য ছিল বিভীষিকাময়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মসজিদ থেকে ভেসে আসেনি আজানের ধ্বনি-তার পরিবর্তে সারারাত শোনা গেছে বোমা আর রকেট শেলের বিস্ফোরণের শব্দ।


ইফতারের সময় খুব কষ্টে জুটেছে পানের অযোগ্য নোংরা পানি। এই অবিশ্বাস্য মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে সচেতন মানুষ হিসেবে নিশ্চুপ থাকলে তা হবে মানবতার অপমান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সংঘাত নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। একই সঙ্গে নির্যাতিত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে আমাদের রয়েছে দৃঢ় অবস্থান। আজ বিশ্ববাসীর উচিত, সম্মিলিত প্রতিবাদের মাধ্যমে এই নৃশংস পৈশাচিক ধ্বংসযজ্ঞের অবসান ঘটানো। একমাত্র ঐক্যবদ্ধ মানবিক কণ্ঠস্বরে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদই পারে রাফা ও গাজার অসহায় মানুষের প্রতি সংঘটিত এই বর্বরতার অবসান ঘটাতে।


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগামী ১০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরগুলোতে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও অবসানের দাবিতে প্রতিবাদ র‍্যালির আয়োজন করেছে। দল-মত নির্বিশেষে সচেতন নাগরিক হিসেবে এই র‍্যালিতে যোগ দিন। বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করুন। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার অবসান হোক। প্রতিষ্ঠিত হোক ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমির অধিকার।

Next Post Previous Post