মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে পুলিশে ১২ বছর চাকরি, অবশেষে গ্রেপ্তার

দীর্ঘ ১২ বছর পর তদন্তে প্রতারণার বিষয়টি উদঘাটিত হলে তাকে আটক করা হয়। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সুমন ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি লাভ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, হোসেন মিয়া তার দাদা নন। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি তদন্ত করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিল করা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া (অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য) তার দাদা নন। সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়ার নাতি না হয়েও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়ে যাবতীয় বেতন ও রেশনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কুমিল্লার বুড়িচং থানায় কর্মরত থাকা কনস্টেবল সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলাকালেই গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Next Post Previous Post