জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ কী?
শুক্রবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে। …আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজ শনিবার সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা একটা রিপাবলিক পেয়েছি। কিন্তু সেটা যেহেতু জনগণের আকাঙ্ক্ষার নিকট অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, তাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ আমূল পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে আছে। এজন্য রাষ্ট্রীয় সংবিধান বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। আর সেটাই হবে সেকেন্ড রিপাবলিক।’
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, এ ভূখণ্ডের মানুষের সব লড়াই একীভূত করে মানুষের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে সংবিধান ও রাষ্ট্র পুনর্গঠন—‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বলতে এটিই বোঝাচ্ছেন তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘প্রথম রিপাবলিক হচ্ছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন। মুক্তিযুদ্ধের পর যে সংবিধান প্রণীত হয়েছে, সেই সংবিধানে কিছু কাঠামোগত ত্রুটির কারণে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃত্বপরায়ণ ও ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠে। এই কাঠামো বারবার সংশোধন করা হয়েছে। তাই সংবিধানের কাঠামোটা এমনভাবে তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে কোনো দল ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে না পারে। এটাই সেকেন্ড রিপাবলিক।’
‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি অনেক দেশেই আছে। যেমন, ফ্রান্স পোল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ আরও কয়েকটি দেশের ইতিহাসে এটি রয়েছে। এমনকি ‘ফিফথ রিপাবলিক’ ও হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সব সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য।’